নীলাদ্রি; নিসর্গের আয়নাঘরে

শরতের এক মধ্য দুপুর। নীরব শান্ত কেমন উদাসী সেই দিনটার কি নাম ছিল বুধবার?

ভরদুপুরে বিছানায় গড় খাচ্ছি। চারপাশ জুড়ে নিঃসঙ্গ শূন্যতা অঝোরে ঝরে পড়ছে। আমি সেই নিস্তব্ধ শীতলতার মখমল আবেশে বুদ হয়ে আছি। ভাবছি, পরীক্ষা উপলক্ষে গত কয়টা দিন কি ধকলটাই না গেল উপর দিয়ে।

ঠিক তখনই পিনপতন নীরবতার অরণ্য ফুড়ে চির পরিচিত শব্দটা কানে এলো— টুইনন ! যেনবা স্বচ্ছ কাঁচের মত শান্ত দিঘীর জলে হঠাৎ একটা পাথর ছুড়লো কেউ। বুঝতে পেরেছি, এই মূহুর্তে কোথাও কেউ স্বরণ করছে আমাকে। হাওয়ায় ওড়ে ওড়ে স্বরনের সেই বারতা টুইন করে এসে ঢুকেছে আমার মুঠোফোনে।

*
‘হাওরের বুক চিরে দাড়িয়ে যে জনপদ ফেনিল সাগর যেখানে বিমূঢ় মুগ্ধতায় শনির হাওরে আছড়ে পড়া ঢেউকে কুর্নিশ জানায় সে আমার জন্মভূমি—সুনামগঞ্জ।’

আমার বাড়ি সুনামগঞ্জে। হিমালয় পর্বতের পাদদেশ জুড়ে অপরূপ যে জনপদটি সবুজে বিস্তৃত, সেখানে। কাছে এলে মানুষের সৌন্দর্য কমে যায়, প্রকৃতিরও। আমার জন্মভূমি কতটা সুন্দর, এই ইট পাথরের রুক্ষ শহর ঢাকাতে আবাসিক হয়ে অনুভব হচ্ছে খুব।

সেই যে হেফজখানার বারান্দা ছেড়ে ওঠে এসেছিলাম আজ কতদিন হলো , কতটা বছর গেলো, এতটুকু জীবনের অর্ধেকটাই তো আটকে রইলো গ্রাম ছেড়ে বহু বহুদূরে এই জাদুর শহরে। তাই কোথায় কি সুন্দর লুকিয়ে ডাকে সুনামগঞ্জে, আমার দেখা হয় নি। প্রতি বর্ষায়-শরৎে-হেমন্তে দুর দুর থেকে মানুষ কি দেখতে ছুটে যায়, আমার জানা হয় নি।

ছুটি কাটাচ্ছি বাড়িতে। টুইন শব্দে মেসেজ পাঠিয়ে যিনি আমার ধ্যানে ভঙ্গ ঘটিয়েছিলেন তিনি আমাদের প্রিয় ও শ্রদ্ধেয় রাশেদ শাহরিয়ার। সুনামগঞ্জ দর্শনের প্রবল উচ্ছ্বাস নিয়ে যিনি পরদিনই ছুটে আসবেন আমাদের বাড়িতে এবং সেই উপলক্ষে চমৎকার একটা দিনের গল্প তৈরী হবে আমার।

*
সেদিন মিষ্টি একটা সকাল ছিল, অম্লমধুর রোদও ছিল, আকাশ ছিল, বাতাস ছিল, মাথার ছায়ায় শুভ্র-সফেদ কয়েকখন্ড মেঘও ছিল।

আমরা একটা বাইকের পেছনে চেপে বসলাম। দুই চাক্কার দুরন্ত ছুটে আমরা যখন শহর ছেড়ে বেড়িয়ে এসেছি ঘরির কাটায় সময় তখন সাতটা।

এই অঞ্চল ঘুরে দেখার জন্য আদর্শ বাহন হচ্ছে মোটারসাইকেল। এখানে আরুহীদের জন্য নির্দষ্ট করে কোন সীমারেখা নেই। একটা বাইকে দুইচারপাঁচ যে কয়জন বসতে পারেন বসে যাবেন ,পথ আটকাবে না কেউ। আমরা রাতেই একটা বাইক ড্রাইবারসমেত ভাড়া করে রেখেছিলাম। পনেরশো টাকার বিনিময়ে সকাল থেকে সূর্যাস্থ পর্যন্ত ঘুরবো আমরা।

শহর ছেড়ে বের হওয়ার মুখে সুরমা নদীর উপর দৃষ্টিনন্দন যে ব্রীজটা তার উপর এসে আমরা একটু দাড়ালাম। নদী থেকে অনেক উঁচুতে ব্রীজটা। লোহার পাতলে হাত রেখে দুরে তাকালাম, যেখানে গাড়ো নীল অবয়বে ঘুমিয়ে আছে পাহাড়, সারিসারি। নীচ দিয়ে মন্থর গতিতে গড়িয়ে যাচ্ছে চিরচেনা সুরমার জল, এলোমেলো কিছু নৌকা। আহা এই শান্ত নদীটা কত পরিচিত আমার। ও তো আমারই প্রতিবেশী। অথচ এতটা আপন করে তাকে দেখার ফুরসত হয় নি আমার।

নদী পার হয়ে আবার ছুটলো আমাদের মোটর বাইক। আমরা খুব সকালে বের হয়েছি তাই তেমন একটা লোক সমাগম চোখে পড়ল না। দুপুরের পর থেকেই নদীর দুই পাড়ে ভীর জমে ওঠে নগরবাসী মানুষের। লোকেরা এখানে এসে স্বাস নেয়, নদী দেখে, তারপর সন্ধ্যা নামার আগে আবার ফিরে যায় যে যার ব্যস্ততায়, নাগরিক কোলাহলে।

*
ছোট্ট একটা শহর সুনামগঞ্জ। ব্রীজটা পার হতেই ফুরিয়ে গেছে। ভালোই হয়েছে। শহরের প্রতি আজকে আমাদের কোন আকর্ষণ নেই। আমাদের গন্তব্য গ্রাম থেকে গ্রাম পেরিয়ে, মেটোপথ মাড়িয়ে সুনামগঞ্জের গহীনে, অন্দরে। নোটবুকে দশটা স্পটের বিবরন টুকে এনেছি, দেখা যাক কয়টাতে যাওয়া যায়।

গাড়ি ছুটছে। নীচে আলকাতরার পলেস্তার করা সরু পথ দ্রুত পিছনে হারিয়ে যাচ্ছে। প্রতি বর্ষায় বানের তোড়ে এই পথগুলি ক্ষতবিক্ষত হয়। পানি নেমে গেলে আবার সেগুলোকে পরিপাটি করে তোলা হয় খুব যতনে। দূর দূর থেকে ছুটে আসা পর্যটকদের সন্মানেই এই আয়োজন। দুইপাশে সবুজ দেখতে দেখতে ২য় বারের মতো আমরা যেখানে যাত্রা বিরতি দিলাম তার নাম— পলাশ বাজার। ড্রাইবার মুজাম্মেল ভাইয়ের ক্ষুধা লেগেছে, নাস্তা করবেন।

আমি রাশেদ ভাইকে নিয়ে বাজার লাগোয়া বিশাল কলেজ মাঠটাতে নামলাম। তখনই মনে হলো— আরে এখানে মূল পর্যটক তো রাশেদ ভাই, আমি তো তার গাইড। গাইড হিসেবে তাকে এখন এই জমজমাট বাজার এবং বাজার লাগোয়া ঐতিহাসিক মাঠাটি সম্পর্কে কিছু ইনফর্মেশন দেয়া আমার কর্তব্য। কিন্তু অনেক ভেবে চিন্তেও মাথায় কিছুই হাজির করা গেল না। এখানে সপ্তায় একদিন হাট বসে, গরু আসে , মানুষ আসে, দূর দূর এলাকা থেকে ট্রাক আসে ইত্যাদি ভুজুংভাজুং কতক্ষন বকে দিয়ে অভিজ্ঞ গাইডের পরিচয় দিলাম। ততক্ষণে মুজাম্মেল ভাইয়ের নাস্তা শেষ।

*
আমাদের আজকের প্রধান আকর্ষণ ‘নীলাদ্রী লেক’। তবে তার আশপাশের স্পটগুলোতেও যেতে হবে। মুজাম্মেল ভাই পাকা ড্রাইবার, কথা দিলেন- সবকটাই দেখিয়ে আনবেন আজ।

লম্বা সময় ড্রাইব শেষে একটা খেয়াঘাটের পাড়ে এসে ব্রেক হলো। এটা যাদুকাটা নদী। নদী তো নয়- ধূ ধূ বালিয়াড়ির মাঝে চকচকে রুপালি পানির সরু একটি তরঙ্গ যেন। উত্তরে মেঘালয় রাজ্যের পাহাড়ি কোন খানাখন্দক থেকে এঁকেবেঁকে নেমে এসে এসেছে এই শীতল জলের ধারা। বালি-পাথরের অনিঃশেষ খনি এই যাদুকাটা। প্রতি বছর এখান থেকে একশো থেকে একশোবিশ কোটি টাকার পাথর উত্তোলন করা হয়। বাংলাদেশের পাথর শিল্পে যাদুকাটা জরুরি প্রসঙ্গ।

আমরা যে জায়গাটাতে দাঁড়িয়ে ফেরির অপেক্ষা করছি এর ঠিক উপরেই সেতু নির্মাণের কাজ চলছে। নির্মানাধীণ একটা পিলারের আড়ালে দাড়িয়ে আছি। অদূরে হাতছানি দিয়ে ডাকছে আমাদের বারিক্কার টিলা। টিলাতে পরে উঠবো। আগে আমরা চলে যাবো নীলাদ্রীতে।

এই খেয়াঘাটের একটু আগেই আমরা অত্র অঞ্চলের বিখ্যাত পর্যটন স্পট শিমুল বাগানটা মাড়িয়ে এসেছি।

১০ বিঘা জমির উপর ৩ হাজার শিমুল তুলার গাছ লাগিয়েছিলেন একদিন যে জয়নাল আবেদীন, তিনি কি জানতেন গাছগুলো বড় হতে হতে একান্ত এই বাগানটি আর তার নিজের থাকবে না? শিমুলের ফুলগুলো যখন সুতীব্র লালিমা ছড়িয়ে দেবে তখন এর সৌন্দর্যে ভাগ বসাতে শত সহস্র মাইল দূর থেকে ছুটে আসবে অগুনিত আগন্তুক। জানতেন কি এমন হুলুস্থুল সাড়া পড়ে যাবে দশদিকে তার এই অযতনে বেড়ে ওঠা তুলার বাগানটা ঘিরে?

এই বাগানের ইতিহাস খুব একটা পুরনো নয়। এইতো করোনা কালের পর থেকে এর শুহরত ছড়াতে আরম্ভ করেছিল। বাগানে দেখার মত ওই লাল টকটকে ফুলগুলোই। সমান্তরালে দাড়িয়ে থাকা সারি সারি গাছগুলোর মাঝে দিয়ে হাঁটলে যে অনুভূতি হয় তা একান্তই উপভোগের। উপরে নিচে ডানে বাম শুধুই রক্তরঙ্গিন শিমুল। মনে হয় চারদিক থেকে ঝরে ঝরে পড়ছে অস্ফুট ভালোবাসা । এমন কেন মনে হয় ? ভালোবাসার কি রং আছে আসলে— রক্তিম শিমুল ফুলের মত ?

জনপ্রতি বিশ টাকার বিনিময়ে আমরা বাগানের প্রবেশাধিকার সংগ্রহ করেছি। গেট পার হতেই চমৎকার একদল টগবগে ঘোড়া আমাদের নজর কাড়লো। ঘোড়া দেখামাত্রই আমার আর্তুগ্রল গাজি সাজার ভূত চাপলো আমার। এমন সুযোগ কি হাতছাড়া করা যায়?

আমরা দুইটা ঘোড়া নিলাম। আমারটা সাদা ধবধবে। ঘাড়ের উপর ঘন মজবুত চুল মেহেদী রাঙা লাল। রাশেদ ভাই নিলেন খয়ের রঙেরটা। ঘোড়ার পৃষ্ঠদেশ আমার চেয়ে দিগুণ উঁচু। টুলের সাহায্য নিতে হলো পিঠে চড়তে। দুইপাশে রেকাবের ভেতর পা আর হাতের মুঠোয় তরতাজা একটা ঘোড়ার লাগাম— আহ কী দারুণ এডভেঞ্চার!

ঘোড়া চালতে শুরু করলো। প্রথমে ধী–রে, তারপর হালকা ঝাঁকুনি, তারপর দৌড়, তারপর তুফানছুট! তারপর! তারপর! একি! এ যে হাওয়ার উপর ছুটছে! মূহুর্তেই আমার সব আনন্দ কাঁদমাটিতে পরিনত হলো। দুচোখে কেবলই অন্ধকার দেখছি। একেকটা লাফের সাথে আমি এদিক ওদিক ছিটকে পড়ার উপক্রম। এত উঁচা থেকে এভাবে ছিটকে পড়লে আস্ত থাকবো না। সর্বশক্তি একত্র করে ঘাড়ে লোম ঝাপটে ধরলাম। অন্তত এই যাত্রায় এভাবে অকালে মরতে চাই না। কিন্তু কোনভাবেই সামলে নিতে পারলাম না। আমার এমন নাজেহাল অবস্থা দেখে আর অনবরত চিৎকার শুনে লোকজন ছুটে আসলো। আর্তুগ্রুল গাজী হওয়ার শখ বাবদ একশো একশো দুইশো টাকা গচ্ছা দিয়ে সমাপ্ত হলো আমাদের বাগান দর্শন।

*
দুপুর ফুরিয়েছে পথেই। সূর্যটা খুব দ্রুত নেমে যাচ্ছে আকাশের পাশ্চিমে। পাকা-আধাপাকা সড়কে ধুলোর ঝড় তুলে সাই সাই ছুটছে আমাদের বাইকটা। দুইপাশে অফুরন্ত দৃশ্য, জীবন ও ছায়াছবি খুব দ্রুত পেছনে ফেলে আমাদের গন্তব্য আরো পশ্চিমে। নীলাদ্রি হাত নাড়ছে অদূরে।

ডানে সারি সারি হিমালয় পর্বতমালা আর বামে আদিগন্ত বিস্তৃত সবুজের সমারোহ, এর মাঝদিয়ে সরু পথটা উচু নিচু টিলা বেয়ে চলে গেছে দূ-রে। আহা, এত মায়া লুকায়ে রাখে প্রকৃতি।

হটাৎ মুজাম্মেল ভাইয়ের আওয়াজ শুনা গেলো। হেলেমেটের ভেতর থেকে বেরিয়ে আসে তার উচ্ছসিত কন্ঠস্বর– ডানদিকে তাকান!
একটা অত্যধিক স্বচ্ছ নীলচে রঙের জলাধার মূহুর্তে আমাদের চোখ ধাঁধিয়ে তুললো।

বাইকের ইঞ্জিন থেমে যায়, থেমে যায় আমাদের সমস্ত কথাবার্তা, যেনবা অনিন্দ্য সুন্দরি প্রেমিকার দেখা পেয়েছে সবাই, জগৎ-সংসার ভুলে নির্বাক তাকিয়ে আছে, তাকিয়েই আছে। কেউ একজন অস্ফুটে বলে উঠে— নী-লা-দ্রী!

একটা বাবলা গাছের ছায়ায় বাইকটা সাইড করে আমরা পা রাখলাম নীলাদ্রির সবুজ স্নিগ্ধ জমিনে। টিলার ওপারে সূর্য তখন নামো নামো। মৃয়মান রোদের মাঝে পাহাড় ছুঁয়ে নেমে আসা ঝিরিঝিরি হাওয়া আমার গতর ফুরে হৃদপিন্ড স্পর্শ করলো বুঝি। নিদারুণ আবেশে হাত-পা ছড়িয়ে শুয়ে পরলাম একেবারে।

মাঝারি সাইজের একটা টিলার ঢালুতে শুয়ে আছি আমরা। পায়ের ঠিক নীচে নীলচে পানির সরোবর, তারপর পাহাড়। কয়েকটা বাহারি নৌকা ভেসে আছে। ভেসে আছেন কতিপয় প্রেমিক যুগল। পুরোটা স্পট জুড়ে কত মানুষ, কত হইচই , বাদাম বিক্রেতা ছেলেদের হাঁক-ডাক অথচ সবকিছু ছাপিয়ে সমগ্র নীলাদ্রি জুড়ে ছেয়ে আছে কি এক আশ্চর্য নীরবতা। পৃথিবীর সমস্ত কলরোল এখানে স্নিগ্ধ হয়ে ধরা দেয় যুগলপ্রেমের অতুচ্চ বক্যলাপের মতো।

এই জায়গাটার প্রতি আজ মানুষের কী তীব্র আকর্ষণ। অথচ এটা নিতান্ত সাধারণ পাথর কোয়ারি বৈ কিছু নয়। যুগ যুগ ধরে অন্য দশটা গর্তের মতই পথের ধারে পড়ে ছিলো নিদারুণ অবহেলায়। তারপর ধীরে ধীরে প্রকৃতি জেগে ওঠে। সবুজে ছেয়ে যায় আশপাশ। উচু নিচু টিলার গাঁ ঘেঁসে বেড়ে উঠে বাহারি গাছ। তার নীচে জমে থাকে পাথার। মানুষের ঘোর কাটে। প্রকৃতির উপহারে একটা পাথর কোয়ারী পরিনত হয় ‘বাংলার কাশ্মীরে’ ।

বৃটিশ শাসনামলে এখানে চুনা পাথর আর কায়লা খনির অস্তিত্ব পাওয়া যায়। মূল্যবান খনিজ সম্পদকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠে সুবিশাল কর্মজজ্ঞ। দৈত্যাকৃতির মেশিন, পাহাড় ভাঙার ভারি ভারি যন্ত্রপাতি, শত শত শ্রমিক নারী-পুরুষ- সে এক এলাহি কান্ড। বৃটিশরা কাজের লোক। তখনকার এই পথঘাটহীন দূর্গম প্রত্যন্ত এমন একটা অঞ্চলে কিভাবে পেরেছিলো রীতিমতো একটা ইন্ড্রাস্টি গড়ে তুলতে। বিশ্বযুদ্ধ সময় হুট করে কোম্পানিটি বন্ধ হয়ে যায়। মেশিন যন্ত্রপাতি সব কিছু রেখেই মালিকপক্ষ নিরুদ্দেশ হন।

কালের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে থাকা শ্রমিক হোস্টেলের কতিপয় দেয়াল আর মাটিতে ধেবে যাওয়া যন্ত্রাংশগুলো আমাকে নস্টালজিক করে তুলে। ইতিহাসের পর্দা ফুরে ভেসে আসে জীবন যুদ্ধে সতত নিরত একদল পাথর-শ্রমিকের নিরস কন্ঠস্বর। তাদের সন্তানেরা হামাগুড়ি দিয়ে আসে। দূরে কোথাও বিকট শব্দে পাথর ভেঙে পড়ে। বাবার মুখে শুনো এইসব টুকরো ইতিহাস জলছাপ ছবির মতো আধো আধো ভেসে যায় স্মৃতিতে।

যাদের নিষ্টুর পরিশ্রমের বিনিময়ে আজকের নীলাদ্রি এই মায়াউদ্যান, আমি তাঁদেরকে খুঁজে পেয়েছি সেদিন সেই ধ্বংসপ্রায় দেয়ালগুলোর মুখোমুখি দাঁড়িয়ে । বহুকাল আগে পৃথিবীতে গত হয়ে যাওয়া সেইসব দিন এখন শ্যওলাজমা এই দেয়ালের মতো মলিন‌ ।

শেয়ার করুন

Subscribe
Notify of
guest
1 Comment
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
মুহাম্মদ রাশেদ শাহরিয়ার
মুহাম্মদ রাশেদ শাহরিয়ার
2025-07-12 11:01

আমিও আপনার সে মধুর সফরের অমধুর সঙ্গী হতে পেরে নিজেকে ধন্য মনে করছি! আবারও আসবো ইনশাআল্লাহ সুনামগঞ্জ ❣️