চিরায়ত

এখানে আরেকটু রোদের ভেতর…

কখনো এইসব শহুরে দুপুরগুলোতে প্রচণ্ড মনখারাপ হলে একাকী চেয়ে দেখি কীভাবে বাসের কালো ধোঁয়ার মতো কালচে হয়ে যাচ্ছে জীবনের পাতাগুলো। নিদাঘ মধ্যাহ্নরা কতটা নিশ্চলতায় খা খা করছে। তোমার শূন্যতারা তখন একটা কুচকুচে কালো কাকের মতো উড়ে যায় বহুদূর। আর পেছনে কেমন নির্বাক হয়ে পড়ে রয় আমার ডাকনাম। নদীর বাঁকের মতো জীবনের বাঁকে বাঁকে নিশ্চুপ দাঁড়িয়ে থাকে কত স্মৃতি। অথচ বহতা সময়ের স্রোতে কখনো ভাটা পড়ে না। তাই কচুরিপানার ন্যায় উদ্দেশ্যহীন জীবনের চক্রে ঘুরতে ঘুরতে নিজেকে হারিয়ে ফেলি। তখন তোমার অনুপস্থিতিরা আমায় নিঃশেষ করে ফেলতে চায়। আর ভুল সরল অংকের মতো জীবনের হিসেব এলোমেলো হয়ে যায়। 

কতদিন এমন হয়েছে, যখন দিগন্তজুড়ে একটা অলস মধ্যাহ্ন শুয়ে থাকতো। আর বাশপাতার বাঁশির আওয়াজে তার ঘুম আরো গভীর হয়ে উঠতো। তখন তোমার হাসির রিনিঝিনি আমি আলতো করে জড়িয়ে দিতাম দুপুরের গায়ে। তোমার মুখের দিকে চেয়ে আমি ভুলে যেতাম জগতের সব রক্তিম দীর্ঘশ্বাস। 

যাপনের অ্যালবামে আজ সেগুলো চিত্রায়িত করি প্রতিনিয়তই।

যেদিন তুমি দুপুরের গদ্যের মতো হারিয়ে গেলে, সেদিন থেকে নৈঃশব্দের আকাশের দিকে তাকিয়ে আমি গুণে চলেছি জীবনের অগুণতি বেদনা।

মধ্যাহ্নের কাঠফাটা রোদ্দুর যখন দাপিয়ে বেড়ায় তেপান্তর, তার পিছু পিছু একাকী ছুটে গেছি দিগন্ত অবধি। সে সময় আমার কানের পাশ দিয়ে শো শো শব্দে উড়ে গেছে কত বিস্বাদ দীর্ঘশ্বাস। যেমন তুমি হারিয়ে গেছো আকাশের ওপারের কোনো আকাশে।

শেয়ার করুন